ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই) বলেন, বিভিন্ন কার্যকলাপের মধ্যদিয়ে দিনদিন সরকারের ইসলাম বিদ্বেষী মনোভাব পরিষ্কার হচ্ছে। মাহে রমজান বিশ্ব মুসলিমের ইবাদাত ও আত্মশুদ্ধির মাস। রোজা, নামাজ, তিলাওয়াতের মধ্যদিয়ে মানুষ এই মাসে ব্যাক্তি ও সমাজ সংস্কারে আত্মনিয়োগ করে থাকে। কিন্তু কলেজ, ভার্সিটি ও সরকারি অফিসগুলোতে পরিকল্পিত ভাবে সরকার ইফতার মাহফিলসহ ধর্মীয় আলোচনার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। সরকার একদিকে দেশের অর্থনীতি ও অভাবের কথা বলে ইফতার মাহফিল তুলে নিয়েছে। অপরদিকে উন্নয়নের গল্প শোনাতে গিয়ে বলে দেশের মানুষ ভাল আছে। সরকারের এই দ্বিচারিতা এদেশের সচেতন মানুষ ধরে ফেলেছে। তারা এই সরকারকে বিশ্বাস করে না। সুতরাং কুরআন নাজিলের এই মাসে দূর্নীতি দূর করে আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে সমাজ সংস্কারের শপথ নিতে হবে।
বুধবার (২৭ মার্চ) পল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মুজাহিদ প্রজন্ম যুবক ভাই ও বিশিষ্টজনদের নিয়ে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠানে উপরোক্ত মন্তব্য করেন তিনি।
পীর সাহেব চরমোনাই আরো বলেন, রমজান বছরের সবচাইতে সম্মানিত মাস। এই মাসে আল্লাহ তাআলা মানব জাতির হেদায়াতের লক্ষ্যে কুরআন নাজিল করেছেন। কুরআনের তিলাওয়াত করলে মানুষের হৃদয়ে যে প্রশান্তি আসে, অন্যকিছুতে তা মিলে না। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়র বটতলায় কুরআন তিলাওয়াত নিয়ে কর্তৃপক্ষ যে আচরণ করেছে, বিশ্বের অন্যতম মুসলিম দেশ হিসেবে তা আমাদের মাথা নিচু করে দেয়। সরকারকে এই ঘটনা খতিয়ে দেখতে হবে।
ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ নেছার উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল মুফতী মানসুর আহমদ সাকীর সঞ্চালনায় ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব আলহাজ্ব আমিনুল ইসলাম, সহকারী মহাসচিব মাওলানা শেখ ফজলে বারি মাসউদ, দাওয়াহ ও প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইউম, ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মুফতী সৈয়দ এছহাক মুহাম্মাদ আবুল খায়ের, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বৈংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মাদ নূরুল বশর আজিজী।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, যুবকরা দ্বীনের পথে আসার হার লক্ষণীয় মাত্রায় বাড়ছে। যুবক বয়সের ইবাদাত আল্লাহর কাছে অধিক পছন্দনীয়। যুবকদেরকে দেশপ্রেম ও ইসলাম বুকে ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে। এভাবেই একদিন আদর্শ যুবকদের মাধ্যমে এদেশের সকল সেক্টর থেকে দূর্নীতি বিদায় নেবে ইনশাআল্লাহ।
মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক ভাবে এবং প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ইফতার মাহফিল উঠিয়ে দিয়ে ইসলামের চেতনায় আঘাত করেছে। ভারতের পক্ষে আওয়ামী সরকারের তাঁবেদারি লজ্জার নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ভারতের শাড়ি পরা নিয়ে বিরোধী দলকে প্রধানমন্ত্রীর উসকানি ভারতপ্রীতির খারাপ নমুনা স্থাপন করেছে।
সভাপতির বক্তব্যে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ নেছার উদ্দিন বলেন, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ এদেশের যুবসমাজের আস্থার প্রতীক। মাদক, টেন্ডারবাজি, ভোট ডাকাতির বিরুদ্ধে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ আদর্শ দিয়ে লাখ লাখ যুবকের মন করেছে। এসময় তিনি আগত কয়েক শত নতুন যুবককে পীর সাহেব চরমোনাইর আদর্শের সাথে একাত্মতা পোষণ করে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও হাজার বছরের ইসলাম বিধৌত এই সমাজের ঐতিহ্য অক্ষুন্ন রাখতে আহ্বান জানান।